শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী মহানগরীতে ৯৯টি পুকুর ভরাটের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার পরও অনেক পুকুর রাতের আধাঁরে ভরাট হয়ে গেছে। কিছু কিছু পুকুর কৌশলে ভরাট করা হচ্ছে। কখনো স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত করে আবার প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের নাম ভাঙ্গিয়ে মূলত এসব পুকুর ভরাটের মহোৎসব চলছে। নিষেধাজ্ঞা জারীর মধ্যে রয়েছে নগরীর সপুরা এলাকায় সুখানদিঘি। এমনকি এই দিঘিটি নিয়ে অংশিদারদের মধ্যেও চলছে মামলা। রয়েছে কোর্টের নিষেধাজ্ঞাও। নিষেধাজ্ঞাজারীর পরও এই দিঘিটি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দিঘিটির উত্তর পাশে বেশ কিছু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। সেই ভরাট করা জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট। দিঘিটি ভরাট করে ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ১৮টি দোকানঘর নির্মাণে ওয়াল দেয়া হয়েছে। একদিকে দিঘিটির উত্তর পাশে মাটি ফেলে ভরাট চলছে, অন্য দিকে চলছে মার্কেট নির্মাণের কাজ। অথচ এই দিঘিটি ভরাট না করতে সরকারীভাবেই নিষেধাজ্ঞাজারী রয়েছে। তারপরও আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলছে দিঘিটি ভরাট ও মার্কেট নির্মাণ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর সপুরার সুখানদিঘির কিছু অংশ গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারমান সোহেল রানা ইউনুস আলীর ছেলে সেলীর কাছ থেকে কিনেছেন। চেয়ারম্যান একজনের অংশ কিনে ভরাট করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। দোকানঘর নির্মাণের জন্য স্থানীয় কিছু লোকজনদের তিনি ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় মোস্তাক হোসেন, সৌরভ আলী, সুমন ও কালু নামে কয়েকজন ব্যক্তি চেয়ারম্যান সোহেলকে দিঘিটি ভরাট ও দোকানঘর নির্মাণ করে দেয়ার শর্তে ভাড়াটে হিসাবে কাজ করছেন। তারা মূলত কেউ বাধা দিতে এলে তাদের প্রতিহত করার জন্য নিয়জিত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এই দিঘিটি ভরাট বন্ধে হাইকোর্ট থেকে নিদের্শনা রয়েছে। এই দিঘির অংশিদার একের অধিক হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন থেকে জটিলতা বেঁধে আছে। কিছু অংশিদার গোপনে দিঘির জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। যারা অংশিদারের জায়গা কিনেছেন তারা জোর করে এই দিঘিটি ভরাট করার চেষ্টা করছেন। দিঘির বেশ কিছু অংশ ইতোমেধ্য ভরা করা হয়েছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা দিঘিটি মূলত ভরাট করছেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা আরো বলেন, বর্তমান এই দিঘিটি ভরাট করা হচ্ছে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম ভাঙ্গিয়ে। কেউ দিঘিটি ভরাটে বাধা দিলে তাকে বলা হচ্ছে এ দিঘিটি ভরাট করার জন্য ওপরের নিদের্শনা রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সোবহান লিটন ও ক্ষমতাশীন দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এই দিঘিটি ভরাটে ইন্ধন দিচ্ছেন এবং সরাসরি সহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এব্যাপারে রাসিকের ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সোবহান লিটন জানান, দিঘিটি ভরাটের ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমার দিক থেকেও আমি ভরাট বন্ধে চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কোনো কথা শোনে না। তিনি বলেন, আদালত থেকে যেহেতু নিষেধাজ্ঞা আছে সেটিও তারা অমান্য করে সেখানে আমাদের কি করার আছে।
এব্যাপারে দিঘি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণকারী মাটিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে সুখানদিঘিটি ভরাট বন্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি একাধিকবার মানববন্ধন করা হয়েছে।